সরকার সারাদেশে অবৈধ জাটকা নিধন করার ঘোষণা করলেও নারায়ণগঞ্জ শহরের ৩নং মাছ ঘাট এলাকায় দেদারছে বিক্রি হচ্ছে জাটকা। সরকারের নিষেধাজ্ঞাকে উপেক্ষা করে টনকে টন জাটকা শহরের ৩নং মাছ ঘাট এলাকায় মাছ ব্যবসায়ী জামাল ও মজিবুরের নেতৃত্বে বিক্রি করা হচ্ছে এসব জাটকা মাছ। জামাল এবং ৩নং মাছঘাট এলাকার মাছ ব্যবসায়ী মজিবুর বাজারে এসব জাটকা বিক্রি করে দেশের সোনালী ইলিশকে ধংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) সরেজমিনে সকালে শহরের ৩নং মাছ ঘাট এলাকায় জামাল ও মজিবুরের নেতৃত্বে অবৈধ জাটকা মাছ দেদারছে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
চলমান জাটকা নিধন অভিযানের বিষয়ে জেলা মৎস অধিদপ্তর এবং নারায়ণগঞ্জ সদর নৌ-থানার তেমন কোন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়নি। বিশেষ করে, নারায়ণগঞ্জ সদর নৌ ওসির বিরুদ্ধে জাটকা নিধন রোধে জোরালো কোন ভূমিকা না রেখে উল্টো অবৈধ জাটকা মাছ বিক্রেতাদের কাছ থেকে সুবিধা নেয়ার গুরুতর অভিযোগও উঠেছে! সম্প্রতি সময়ে শহরের ৩নং মাছ ঘাট এলাকা থেকে ১৪শ’ কেজি অবৈধ জাটকা আটক করা হলেও মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে রফাদফা করার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে নারায়ণগঞ্জ সদর নৌ-থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে!
এছাড়াও প্রতিদিন চাঁদপুর মোহণা ও ধলেস্বরী নদী থেকে আটক হওয়া জাটকা ধরে নারায়ণগঞ্জ ৩নং মাছ ঘাট এলাকায় প্রকাশ্যে বিক্রি করা হলেও মাত্র ১শ’ গজ দূরে থাকা নারায়ণগঞ্জ সদর নৌ-থানা পুলিশকে অভিযান পরিচালনা করতে দেখা যায়নি। শুধু তাই নয় কখনো কখনো শহরের ৩নং মাছ ঘাটে দেদারছে জাটকা বিক্রি করা হচ্ছে এই মর্মে সদর নৌ থানার ওসি মনিরুজ্জামানকে অবগত করলেও তিনি এ বিষয়ে পদক্ষোপ গ্রহণ করেননি। তাই জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, তাহলে কি নৌ থানার ওসি মনিরুজ্জামান এই অপকর্মের সাথে জড়িত?
মোটা অংকের টাকার বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ সদর নৌ-থানার ওসি মনিরুজ্জামান জানান, জামাল ও মজিবুর নামের কাউকে আমি চিনি না। চাঁদপুর মোহনা ও ধলেশ^রী নদী থেকে আটক হওয়া জাটকা মাছগুলো আমি প্রতিদিন নারায়ণগঞ্জ শহর ও বন্দরের নদীর দু’পাশে অবৈধ জাটকা নিধনের অভিযানটি পরিচালনা করি। যেখান থেকে জাটকা ধরা হয় সেখান থেকে বন্ধ না করতে পারলে আমরা কিভাবে বন্ধ করবো?
অপরদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যাক্তি জানায়, শহরের ৩নং মাছঘাট এলকায় অবৈধ জাটকা মাছগুলোর বিক্রেতা মজিবুর ও জামাল। নারায়ণগঞ্জ সদর নৌ-থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মনিরুজ্জামানকে মাছ বিক্রি করার আগে মোটা অংকের টাকা হাতে দিলেই নাকি অবৈধ জাটকা মাছগুলো বিক্রি করা যায়।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা মৎস কর্মকর্তা ডক্টর ফজলুল কাদির জানান, জাটকা নিধনের বিষয়ে আমাদের অভিযান চলমান আছে। আমার অফিসের কোন কর্মকর্তা যদি কোন ধরনের অপকর্মের সাথে জড়িত থাকে তার বিরুদ্ধে আমি অবশ্যই ব্যবস্থা নিবো। নারায়ণগঞ্জ সদর নৌথানার ওসি মনিরুজ্জামানের টাকা নেয়ার বিষয়ে যে কথাটি উঠেছে সে বিষয়টি আমিও জেনেছি। আমি মনে করি, জাটকা নিধন অভিযানে জেলা মৎস অধিদপ্তরের পাশাপাশি নৌ-পুলিশেরও গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকতে হবে এবং একে অপরের সমন্বয় করে কাজ করতে হবে।
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।